জেনে নিই
''বাংলাদেশ ২০°৩৪' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৬°৩৮' উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং অপরদিকে ৮৮°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ১২°৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। গ্রিনিচ মান মন্দির (লন্ডন) থেকে ৯০° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত। কর্কটক্রান্তি বা ট্রপিক অব ক্যান্সার বাংলাদেশের প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে। সুতরাং বাংলাদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
বাংলাদেশের মৌসুমী জলবায়ু ও সমভাবাপন্ন নাতিশীতষ্ণ আবহাওয়া বিদ্যমান। ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-
১। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ (মোট ভূমির প্রায় ১২%)
২। প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ (মোট ভূমির ৮%)
৩। সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি (মোট ভূমির প্রায় ৮০%)
জেনে নিই
দিক | সীমান্ত রাজ্য |
---|---|
উত্তরে | ভারতের আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গ |
পূর্বে | ভারতের আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মিয়ানমার |
দক্ষিণে | মিয়ানমার, বঙ্গোপসাগর |
পশ্চিমে | ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য |
জেনে নিই
বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ
ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন বাংলা প্রদেশে সর্বপ্রথম বিভাগ গঠন করা হয়। সেসময় বর্তমান বাংলাদেশের ভূখণ্ডে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এই তিনটি বিভাগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৬০ সালে খুলনা বিভাগ গঠিত। হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে এই চারটি বিভাগ ছিল। ১৯৮২ সালে ঢাকা বিভাগ এবং ঢাকা শহরের ইংরেজি বানান Dacca (ঢাকা) কে পরিবর্তন করে Dhaka (ঢাকা) করা হয় যাতে বাংলা উচ্চারণের সাথে ইংরেজি বানান আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। খুলনা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৯৩ সালে বরিশাল বিভাগ গঠিত হয়, এবং ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙে সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১০ সালে ২৫ শে জানুয়ারি বৃহত্তর রংপুর আর দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয়, যা আগে রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে অষ্টম বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্বে এটি ঢাকা বিভাগের অংশ ছিল। বর্তমানে প্রস্তাবিত দুইটি বিভাগের নাম পদ্মা ও মেঘনা ।
বিভাগ ভিত্তিক জেলাসমূহ
ঢাকা বিভাগঃ ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাইল, নরসিংদী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী।
চট্টগ্রাম বিভাগঃ চট্টগ্রাম, রাগামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্বাসজার, লক্ষ্মীপুর, চাদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রক্ষ্মনবাড়িয়া।
রাজশাহী বিভাগঃ রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ , নওগা, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাট ।
খুলনা বিভাগঃ খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা
বরিশাল বিভাগঃ বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা।
রংপুর বিভাগঃ রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়।
সিলেট বিভাগঃ সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।
ময়মনসিংহ বিভাগঃ ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা ও শেরপুর।
চারিদিকে পানি বা জল দ্বারা পরিবেষ্টিত ভূখণ্ডকে দ্বীপ বলা হয়। নিকটবর্তী একাধিক দ্বীপের গুচ্ছকে দ্বীপপুঞ্জ বলা হয়।
প্রাকৃতিকভাবে বিস্তীর্ণ জলরাশি ভূ-ভাগে আবদ্ধ হয়ে একটা স্থায়ী জলাশয় সৃষ্টি করে তাহলে সেই জলাশয়কে হ্রদ বা লেক বলে। হ্রদ হলো ভূ-বেষ্টিত লবণাক্ত বা মিষ্টি স্থির পানির বড় আকারের জলাশয়। হ্রদ উপসাগর বা ছোট সাগরের মতো কোনো মহাসমুদ্রের সাথে সংযুক্ত নয়, তাই এতে জোয়ার ভাটা হয় না। মাটি নিচু হয়েও হ্রদের সৃষ্টি করতে পারে। রাঙ্গামাটি লেকের জেলা হিসেবে পরিচিত।
ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র- ৪ টি।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট
বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট
পৃথিবীর ৪টি দ্রাঘিমা রেখা (০°, ৯০°, ২৭০° ও ১৮০° ডিগ্রি) এবং ৩টি অক্ষরেখা (কর্কটক্রান্তি রেখা, মকরক্রান্তি রেখা ও নিরক্ষরেখা) পরস্পর ১২টি স্থানে ছেদ করেছে। যার ১০টি পড়েছে সমুদ্রে, আর বাকি ২টি স্থলভাগে। স্থলভাগের একটি মিলনস্থল সাহারা মরুভূমিতে (জনমানবহীন) এবং অন্যটি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে নির্মান করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা ও কর্কটক্রান্তি রেখার মিলনস্থল এটি।
একটি দেশের ভৌগোলিক সীমানা থেকে বিচ্ছিন্ন এবং অন্য দেশের ভূখণ্ড বা অন্য দেশের মধ্যে একটি দেশের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে ছিটমহল বলে। ছিটমহল সমস্যার উদ্ভব হয় ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময়।
জেনে নিই
তিনবিঘা করিডোরের অবস্থান তিস্তা নদীর পাড়ে । এটি স্বতন্ত্র ভূমি যা ভারতের মালিকানাধীন সীমান্তবর্তী ৩ বিঘা জায়গার মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ করিডোর দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহলে যাতায়াত করা হতো।
জেনে নিই
শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে দেশের অবশিষ্ট অংশের সংযোগরক্ষাকারী একটি সংকীর্ণ ভূখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এই ভূখণ্ডের আকৃতি মুরগির ঘাড়ের মতো বলে একে চিকেন'স নেক নামেও অভিহত করা হয়। এই ভূখণ্ডের প্রস্থ ২১ থেকে ৪০ কিলোমিটার। এর দুপাশে নেপাল ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র।
ধরি, ভারতের অনুমতি সাপেক্ষে ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ভুটানে মালামাল পরিবহন করা হলো এখানে ভারত; বাংলাদেশ ও ভুটান উভয়ের জন্য ট্রানজিট হিসেবে বিবেচিত হবে। এবার আসা যাক কারডোরের ব্যাপারে। করিডোর নিজ দেশের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাবার জন্য ব্যবহৃত ভূখন্ড, যা দ্বিতীয় আরেকটি দেশের আয়ত্বাধীন।
জেনে নিই
বঙ্গোপসাগর হলো বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগর। এটি ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশে অবস্থিত ত্রিভূজাকৃতির উপসাগর। এই উপসাগরের পশ্চিম দিকে রয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা, উত্তর দিকে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ এবং পূর্ব দিকে রয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। বঙ্গোপসাগরের ঠিক মাঝখানে বিরাজ করছে ভারতের অধিভুক্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। বঙ্গোপসাগরের আয়তন ২১,৭২,০০০ বর্গকিলোমিটার একাধিক বড় নদী এই উপসাগরে এসে মিশেছে: পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, ইরাবতী, গোদাবরী, মহানদী, কৃষ্ণা, সুবর্ণরেখা, কাবেরী ইত্যাদি। বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলি হল চেন্নাই, চট্টগ্রাম, পায়রা বন্দর, কলকাতা, হলদিয়া, মংলা, বিশাখাপত্তনম ও ইয়াঙ্গুন। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলি হল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চেন্নাই, পুরি, বিশাখাপট্টনম, সুন্দরবন, দিঘা, ফুকে, কুয়াকাটা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ইত্যাদি ।
জেনে নিই
আরও দেখুন...